প্রকাশিত: ২৬/০৫/২০১৮ ৪:৫৩ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:২৬ এএম
কাচ তোলা গাড়ির জানালায় ভিখারিণী ‘মা’। ঘুমিয়ে আছে শিশুটি। ছবি সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক : শরীরের এক ফালি মলিন কাপড়ে লজ্জা ঢাকছে হাঁটুর উপর পর্যন্ত। কাঁধে উলঙ্গ শিশু। পাশে ছোট ছোট পায়ে তাল মিলিয়ে চলেছে আরও দুই নগ্ন বালক। রোদে ঝলসানো হাড়সর্বস্ব শরীরের এক হাতে ধরা ভাঙা পাত্র।

দু’মুঠো ভাতের ভিক্ষা চেয়ে সেই মায়ের প্রবল আকুতিতে তত ক্ষণে পাড়ার এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে উঁকিঝুঁকি শুরু হয়ে গিয়েছে। এ দৃশ্য এখন দেখা যায় না। বরং ফুটপাতের ধারে অথবা স্টেশন চত্বরের ভিখারিণী মায়েদের অহরহ চোখে পড়ে।

কোলে টানটান শুয়ে শিশু। কখনও কখনও বদলেও যায় কোলের শিশুটি। কিন্তু বদলান না মা। সত্যিই এরা মা তো? খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।

হাওড়া, শিয়ালদহ, দমদম স্টেশন চত্বরে, নন্দন-রবীন্দ্র সদন, ধর্মতলা এলাকায় ওদের কারও কারও দেখা মিলবে।

এছাড়াও ওদের আরও ঠিকানা রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে জিপিও-র সামনে সন্তান কোলে ভিক্ষা করেন এক নারী। যারা নিয়মিত ওই পথে যাতায়াত করেন, তারা কোনও দিন সেই মাকে ঘোমটা ছাড়া দেখেননি। তার কোলের শিশুটিকেও জেগে থাকতে দেখেননি কেউ। হাত-পা ছড়িয়ে ঘুমোয় সে।

শৈশব চুরি হয়ে যাওয়া এই শিশু প্রায় সব সময়েই ঘুমিয়ে থাকে। কখনও মা, কখনও বা ভাই-বোনের কোলে। হাজারো টানা-হ্যাঁচড়াতেও চোখ খোলে না ওরা।

কথা হচ্ছিল দমদম স্টেশন চত্বরের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তার মতে, ভিক্ষা নয়, এ তো ব্যবসা। মা বা ভাই-বোন নয়, ওরা আসলে ভাড়া করা কলাকুশলী। এই পেশায় সব থেকে বেশি চাহিদা শিশুদের।

নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শহরে ছাড়লে ন্যূনতম দৈনিক ২০০ টাকা ভাড়া জোটে পরিবারের। ওদের রাখলে সারা দিনের উপার্জন প্রায় ৪০০ টাকা। পার্ক স্ট্রিটের মতো জায়গায় হিসেবটা ৬০০ ছাড়িয়ে যায়। এর পরেই কিন্তু সব থেকে বেশি চাহিদা রয়েছে বৃদ্ধ মুখের।

জন সচেতনতার কথা যতই বলা হোক, প্রশাসন কিন্তু ঘুমিয়েই। এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে বছর কয়েক আগের উত্তর শহরতলির একটা ঘটনা।

প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার পথে স্টেশনে ঘুমন্ত বাচ্চা কোলে এক ভিখারিণীকে দেখতে পেতেন এক শিক্ষিকা। এক দিন ধৈর্যের বাধ ভেঙে যায় তার। সরাসরি প্রশ্ন করেন, রোজ বাচ্চাটা ঘুমোয় কেন? যথারীতি অসুস্থতার গল্প শোনান সেই ভিখারিণী।

নাছোড়বান্দা শিক্ষিকা চিকিৎসার কাগজ চেয়ে জেরা শুরু করতেই পালানোর চেষ্টা করেন ওই ভিকারি নারী। অবশেষে পুলিশের জালে একাই ধরা পড়েন তিনি। কিন্তু কান টানলেও বেরিয়ে আসে না মাথা। কারণ কান আর মাথার যোগ ছিল সুতো দিয়ে। জালে কান আটকাতেই নির্দেশ আসে সুতো কেটে দেওয়ার।

তবে বেরিয়ে আসে সেই ভয়াবহ তথ্য, শিশুটি তার কেউ নয়। প্রতিদিন তাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে আচ্ছন্ন করে রাখা হত। খিদে আর শৈশবের ইচ্ছেগুলো এ ভাবেই ঘুম পাড়িয়ে রেখে অন্যের পেট ভরায় ওরা।

পাঠকের মতামত

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ব্ল্যাকলিস্ট, তালিকায় এক ডজন দেশ

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ ও ভিসা পাওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন ...

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আসিয়ান

রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। পাশাপাশি ...

ফিলিস্তিনপন্থি গ্রুপকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন টিউলিপ

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রো-প্যালেস্টাইন কর্মসূচির সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবে ...